অনলাইন ডেস্ক
রমজান মাস এলে রোজার সঙ্গে সঙ্গে যে ইবাদতটির নাম সর্বাগ্রে আসে, তা হলো তারাবির নামাজ। রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মুসল্লীদের তারাবির নামাজ পড়া নিয়ে নানা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে কলেজের অধ্যক্ষ আমেনা বেগমের বিরুদ্ধে। গত কয়েক দশক যাবত রমজান মাস আসলেই শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি আশেপাশের মুসল্লীরাও কলেজ মসজিদে তারাবির নামাজ আদায় করেন।
মসজিদের ভিতরে জায়গা না হওয়ায় প্রতিবছর মাঠে নামাজ আদায়ে ব্যবস্থা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তবে এবছর তা বন্ধ করেছেন বর্তমান অধ্যক্ষ। বাইরের মুসল্লীদের নামাজ আদায়ের বিষয়েও দিয়েছেন নিষেধাজ্ঞা। মসজিদে মুসল্লী কমাতে সূরা তারাবিহ বন্ধ করে খতম তারাবি চালুর কথাও জানিয়েছেন তিনি।
এতে কলেজের শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষার্থী, কর্মচারী, শাখা ছাত্রলীগসহ স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই রমজান মাসের মতো সময়ে অধ্যক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে বলে জানান তারা।
জানা যায়, কলেজ ক্যাম্পাসের আশেপাশের মসজিদগুলোতে খতম তারাবিহ পড়ানো হলেও কলেজ মসজিদে সূরা তারাবিহ পড়ানো হয়। কম সময় লাগার করণে আশেপাশের এলাকার বেশিরভাগ মুসল্লীই এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে আসেন। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কলেজের আবাসিক ছাত্রাবাস থেকেও আসেন অনেক শিক্ষার্থী। স্থানীয় লোকজনসহ প্রায় কয়েকশ মানুষ জামাতে তারাবির নামাজ আদায় করেন।
মসজিদের ভেতরে জায়গা না হওয়ায় প্রতি বছর, মসজিদের বাইরে মাঠে কার্পেট বিছিয়ে নামাজের ব্যবস্থা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। বৃষ্টিতে মুসল্লীদের কষ্ট লাঘবে মাঠের উপরে ছাউনির ব্যবস্থাও করা হয়। প্রায় কয়েক যুগ ধরে কলেজ মসজিদে মুসল্লীদের জন্য তারাবির নামাজ আদায়ে নানা ব্যবস্থা নিলেও বর্তমান অধ্যক্ষ আমেনা বেগম বাইরের মুসল্লীদের নামাজ আদায় নিয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। করা হয়নি কোনো ছাউনির ব্যবস্থা। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী,কর্মকর্তা-কর্মচারী, শাখা ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
অধ্যক্ষ’র কার্যালয় সূত্রে এক শিক্ষক জানান, কলেজের আশেপাশের মুসল্লীদের নামাজ আদায়ের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ। এতো মানুষ কেন এই মসজিদে নামাজ পড়বে? এতো জনসমাগম কেন হবে? এসব বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে এবছর মাঠে তিনি ছাউনির ব্যবস্থা করেননি। কলেজ মসজিদের ইমাম ও শিক্ষার্থীরা বারবার জানানোর পরেও জনসমাগম এড়াতে সূরা তারাবিহ বন্ধ করে খতম তারাবিহ চালুর কথাও জানিয়েছেন অধ্যক্ষ।
তিনি বলেন, সুরা তারাবীতে লোক যেহেতু বেশি হয় প্রয়োজনে খতমে তারাবি হবে। তাও বাইরের লোক বা বাইরের শিক্ষার্থীদের নামাজ আদায় করতে দেওয়া যাবে না।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানান, ‘আমরা অধ্যক্ষ ম্যাম এর কাছে গিয়েছিলাম মসজিদের বাইরে ছাউনি ও ফ্যান লাগানোর ব্যবস্থা করতে। তিনি বলেন, বাইরের মুসল্লীদের জন্য আমি কিছু করবো না। দরকার হলে সূরা তারাবি বন্ধ করে খতম তারাবিহ চালু করবো। এতে মুসল্লী কম হবে। তিনি ইমাম সাহেবকে ডেকে খতম তারাবিহ চালুর ব্যাপারে কি সব বলছে। একজন অধ্যক্ষ এসব কথা কিভাবে বলে।
কলেজের শিক্ষার্থী কাজী ইব্রাহীম ফেসবুকে লিখেছেন, বিভাগীয় প্রধান থেকে কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হওয়া। এখন চোখে শুধু তারা দেখেন। নিজ যোগ্যতা বিহীন অধ্যক্ষ হলে এমনই হয়।
কলেজ ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির সহ-সভাপতি ইমরান হোসেন বাবু লিখেছেন, জনসমাগম কমাতে সূরা তারাবির পরিবর্তে খতম তারাবির ব্যবস্থা।কবি নজরুল সরকারি কলেজ প্রশাসন।