কেরানীগঞ্জে প্রবাস ফেরত স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যাওয়া স্বামী নুরুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। রোববার রাতে রাজধানীর কাকরাইল এলাকা থেকে র্যাব-১০ এর একটি টিম নুরুলকে গ্রেফতার করে।
কাতার প্রবাসী এক ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়া রয়েছে- এমন সন্দেহ থেকে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করেছে— র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে এমনটিই জানিয়েছে নুরুল।
১৭ মে কেরানীগঞ্জের বরিশুর এলাকার মেসে ডেকে নিয়ে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার পর পালিয়ে যায় নুরুল। এ ঘটনায় স্ত্রীর বোন বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। ঘটনাটির ছায়াতদন্তে নামে র্যাব-১০।
জানা গেছে, ১২ বছর পূর্বে ভিকটিম রেশমা আক্তারের (২৫) সঙ্গে একই গ্রামের মো. নুরুল ইসলামের (৩৫) বিয়ে হয়। বিবাহিত জীবনে তাদের একটি পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করে। বিয়ের কিছুদিন পর জীবিকার তাগিদে রেশমা জর্ডান গমন করেন। জর্ডানে থাকাবস্থায় রেশমার সঙ্গে নুরুল ইসলামের সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিবাদ শুরু হয়। বনিবনা না হওয়ায় জর্ডান থেকে স্বামীকে তালাক দেন রেশমা।
এ ঘটনার প্রায় ৩ মাস পর ২৮ এপ্রিল ২০২২ রেশমা জর্ডান থেকে বাংলাদেশে আসেন। আসার খবর পেয়ে নুরুল তালাক হওয়া সত্ত্বেও তাকে নিয়ে সংসার করার জন্য রেশমা ও তার মা-বোনসহ অন্যান্য আত্মীয়স্বজনদের কাছে মিনতি করে।
একপর্যায়ে রেশমা নুরুলের কথায় রাজি হয়ে ১৫ মে পুনরায় তাদের সংসার জীবন শুরু করেন। ১৭ মে সকালে নুরুল রেশমাকে নিয়ে তার ভাড়া মেসে যায়।
দুপুর পৌনে ১টার দিকে নুরুল তার শ্বশুরবাড়িতে এসে ১০ বছরের ছেলেকে জানায়, তার মাকে বরিশুর এলাকায় (নুরুল ইসলামের ভাড়া করা মেসে) আটক করে রেখেছে। এরপর সে পালিয়ে যায়। রেশমার ছেলে ও মা মেসে গিয়ে দরজা তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পায়। জানালার পাশে রাখা চাবি দিয়ে রুম খুলে গলাকাটা অবস্থায় রেশমার লাশ ফ্লোরে দেখতে পায়।
র্যাব জানায়, পুনরায় সংসার জীবন শুরু করার দুই দিনের মাথায় রেশমার সঙ্গে কাতার প্রবাসী এক যুবকের সম্পর্কের সন্দেহসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিবাদের সৃষ্টি হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে পরিকল্পিতভাবে রেশমাকে ভাড়া মেসে নিয়ে ধারালো চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে নুরুল।
হত্যাকাণ্ডের পরপরই সে নিজেকে আত্মগোপন করার জন্য প্রথমে বরিশাল চলে যায়। সেখানে একদিন অবস্থান করার পর সে লঞ্চযোগে ঢাকা ও চাঁদপুর হয়ে চট্টগ্রাম যায়। চট্টগ্রামে দুই দিন অবস্থান করার পর সেখানেও সে নিজেকে নিরাপদ মনে না করে পুনরায় ঢাকা হয়ে বরিশাল যাওয়ার পথে র্যাবের হাতে ধরা পড়ে।