ভারত শক্তিশালী প্রতিপক্ষ, নিঃসন্দেহে। মেয়েদের ওয়ানডেতে বাংলাদেশ কখনোই হারাতে পারেনি তাদের। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিগাল সুলতানা–শারমিন আক্তার–সালমা খাতুনদের যে পারফরম্যান্স, তাতে জয়ের একটা প্রত্যাশা ছিলই। জয় না হোক, নিদেনপক্ষে লড়াই—এমন কিছুর আশা তো ছিলই ক্রিকেটপ্রেমীদের। কিন্তু হ্যামিল্টনে আজ ব্যাট হাতে ব্যর্থ মেয়েরা। ভারতের কাছে ১১০ রানের বড় ব্যবধানে হেরে গেছে তারা।লক্ষ্যমাত্রাটা সহজ ছিল না। ২৩০ রানের লক্ষ্যে জয়ের চিন্তায় বাংলাদেশকে ব্যাটিংটা করতে হতো নিজেদের ছাপিয়ে গিয়েই। সেটি তো হয়–ই নি, নিজেদের সাধারণ খেলাটাও খেলতে পারেননি
বাংলাদেশের মেয়েরা। ভারতের ২২৯ রানের জবাবে শুরু থেকেই এলোমেলো ছিলেন তাঁরা। শারমিন আক্তার, ফারজানা হক, নিগার সুলতানারা ব্যাট হাতে কিছুই করতে পারেননি। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মুর্শিদা শুরু করেছিলেন। কিন্তু বেশিদূর এগোতে পারেননি। ব্যাট হাতে সারমা খাতুন আর লতা মণ্ডল ছাড়া কেউই দাঁড়াতে পারেননি। লতা–মুর্শিদা–সালমাদের কল্যাণে অন্তত একশ রান পার হতে পেরেছে বাংলাদেশ। মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে এটি ছিল বাংলাদেশের মেয়েদের পঞ্চম ম্যাচ। প্রথম দুই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের পর তৃতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পায় বাংলাদেশ। চতুর্থ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৪ রানে হারে দল। আজকের ম্যাচে হেরে কার্যত বিশ্বকাপ শেষই হয়ে গেল মেয়েদের।উদ্বোধনী ব্যাটার শারমিন আক্তার মেরেন শুরুতেই। দলীয় ১২ রানের মাথায়। ১৫ রানের মাথায় ফেরেন ফারজানা হক। বাংলাদেশের এই ব্যাটার আজ ৫ রান করতে পারলেই নারীদের ওয়ানডে ক্রিকেটে হাজার রানের মাইলফলক ছুঁতেন। কিন্তু তিনি উল্টো আজ আউট হয়েছেন ১১ বল খেলে, কোনো রান না করেই।
উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মুর্শিদা খাতুনের ব্যাটে কিছুটা প্রতিশ্রুতির ছাপ ছিল। ৫৪ বলে ১৯ রান করে আউট হন পুনম যাদবের বলে হারমানপ্রীত কাউরের ক্যাচ। অধিনায়ক নিগার সুলতানাও আজ ৩ রানের বেশি করতে পারেননি। তিনি আউট হন স্নেহ রানার বলে। তাঁর ক্যাচটি নিয়েছেন রাজেশ্বরী গায়কোয়াড়।
বাংলাদেশের রান তাড়ায় লড়েছেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সালমা খাতুন। লতা মণ্ডলের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ৬২ বলে ৪০ রানের একটা জুটি গড়েছিলেন তিনি। এই জুটিই যা একটু চোখ রাঙিয়েছিল ভারতকে। সালমা লড়ছিলেন স্রোতের বিপরীতে। নিজের সব অভিজ্ঞতা ব্যবহার করছিলেন। আলগা বলগুলোকে দিচ্ছিলেন প্রয়োজনীয় শাস্তি। কিন্তু সেটি বেশিক্ষণ করতে পারেননি। ৩৪ বলে ৩২ রান করে সালমা ঝুলন গোস্বামীর বলে উইকেটকিপার রিচা ঘোষের হাতে ধরা পড়েন। তাঁর ইনিংসে ছিল চারটি বাউন্ডারি। লতার ইনিংসটি ছিল ৪৬ বলে ২৪ রানের। সালমা ফেরার পর তিনিই দলের হালটা ধরে রেখেছিলেন। পুজা বস্ত্রাকরের বলে হারমানপ্রীতের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। তিনি বাউন্ডারি মেরেছেন এই দুজনের পর বাংলাদেশের আর কোনো ব্যাটারই ভারতীয় বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতে পারেননি। শেষ দিকে জাহানারা আলম এদিক-ওদিক মেরে কিছু রান তোলেন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ১১৯ রানেই, ৯. ৩ ওভার ওভার হাতে রেখে।
ভারতের সেরা বোলার ছিলেন স্নেহ রানা। তিনি ১০ ওভার বোলিং করে, ২ মেডেনে ৩০ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেট। অভিজ্ঞ ঝুলন গোস্বামী নিয়েছেন ১৯ রানে ২টি। দুই উইকেট নিয়েছেন পুজা বস্ত্রাকরও। একটি করে উইকেট নিয়েছেন পুনম যাদব ও রাজেশ্বরী গায়কোয়াড়।
বিশ্বকাপে আর দুটি খেলা বাকি বাংলাদেশের। সে দুটিও মেয়েদের ক্রিকেটের অভিজ্ঞতম দুই দল ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।২টি।