বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভানেত্রী ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেছেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আইন সংস্কার, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য প্রশিক্ষণ ও কাজের সুযোগ সৃষ্টি, নারী চলাফেরা ও পোশাককে টার্গেট করে তৈরি হওয়া বাধাকে নির্মূলের লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছে।
এ আন্দোলনের একটা অর্জন হচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মেয়েরাও ভাবতে শিখেছে তাদের মানুষ হিসাবে বাঁচতে হবে। নারী-পুরুষের সমতা হচ্ছে স্থায়ী উন্নয়নের মূল ভিত্তি এ কথার সত্যতা আজ দৃশ্যমান। এ সময় সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তরুণদের অভিজ্ঞতাকে নারী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবেমহিলা পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের আনোয়ারা বেগম মুনিরা খান মিলনায়তনে বুধবার ‘নারী আন্দোলন বিষয়ে কেয়ার বাংলাদেশ-এর তরুণ স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাগত বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সঙ্গে কেয়ার বাংলাদেশের স্বেচ্ছাসেবীদের সম্পৃক্ততা করার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কেয়ার বাংলাদেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম বলেন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ একটি স্বেচ্ছাসেবী গণনারী সংগঠন হিসাবে নারীর মুক্তি ও নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ৫২ বছর ধরে বহুমাত্রিক পদ্ধতিতে কাজ করছে। নারীর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে পরিচালিত করতে সংগঠনের বিভিন্ন উপপরিষদের কাজগুলো করতে হবে।
কেয়ার বাংলাদেশের অ্যাকটিং ডিরেক্টর (উইমেন অ্যান্ড গার্লস এমপাওয়ারমেন্ট) রওনক জাহানের মতে, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে ও মেয়েদের প্রতি সমাজের প্রচলিত জেন্ডার বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনে চলমান ‘ঞরঢ়ঢ়রহম চড়রহঃ ওহরঃরধঃরাব’ প্রকল্পের আওতায় তৃণমূল পর্যায়ে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কিশোরীরা কাজ করছে। নারী আন্দোলনের সঙ্গে তরুণীদের যোগসূত্রতা তৈরি জন্য করতে হবে। যাতে প্রকল্প শেষ হয়ে গেলেও ভবিষ্যতে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কার্যক্রম অব্যাহত থাকে।
মুক্ত আলোচনায় কেয়ার বাংলাদেশের তরুণ স্বেচ্ছাসেবকরা বাল্যবিয়ে ও জেন্ডার বৈষম্য প্রতিরোধে কাজ করার অভিজ্ঞতা, কাজের চ্যালেঞ্জ ও অর্জন সম্পর্কে আলোচনা করেন।
তারা বলেন, পরিবার ও সমাজে মেয়েদের প্রতি এখনো অনেক বৈষম্যমূলক পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। আমরা মেয়ে সব সময় কেবল এটিই মনে করানো হয়। মেয়েদের সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন আইন থাকলেও তার প্রয়োগ নেই। অনেক সময় দারিদ্র্যের কারণে ও বিয়ের পরও পড়ার সুযোগ দেওয়ার কথা বলে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধের ক্ষেত্রে পুলিশের ঘুস নিয়ে অসহযোগিতা বন্ধে আইনের মাধ্যমে শাস্তির ব্যবস্থা রাখা, মেয়েদের পড়াশোনা, প্রশিক্ষণ ও স্বকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি ও ধর্মান্ধতা বন্ধে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কেয়ার বাংলাদেশের তরুণ স্বেচ্ছাসেবক সুমাইয়া সিদ্দিকী, খাদিজা আক্তার মুনমুন, পপি আক্তার, শম্পা আক্তার, ফারজানা আক্তার, সুমাইয়া আক্তার, সাদিয়া আক্তার, পলি রানী, অর্পিতা বসুনিয়া, সাবিনা ইয়াসমিন, সামিয়া আজম, মৌসুমী ইয়াসমিন ও রেনেকা আহমেদ অন্তু।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগম।।
হোম | যোগাযোগ | গোপনীয়তার নীতি | শর্তাবলী
All Rights Reserved By PM LLC © 2020 To Present - Development By Rumel Ahmed